ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল জানুন

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? পাঠক আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। সবাই চায় তার একটি কল্যাণময় জীবন হোক এবং তার রিজিক বেড়ে যাক। সবার জীবনে প্রাচুর্য নেমে আসুক এরকমটি সকলেই চাই। কিন্তু আসলে প্রকৃত কল্যাণময় এবং প্রাচুর্যময় জীবন তারাই পাই যারা আল্লাহর কাছে চাইতে পারে।
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল জানুন
আর আল্লাহ তা'আলা যাদের দান করেন একমাত্র তারাই এরকম প্রাচুর্যময় ও কল্যাণময় জীবন পেতে পারে। ইসলামে ধনী হতে নিষেধ করা হয়নি। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক সাহাবীরা ধনী ছিলেন। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় নির্ধারণ করেছি ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য নিয়ে। আশা করি আমার আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল জানুন

অভাব মানুষকে অনেক সময় কুফরির দিকে ঠেলে দেয়। যার কারণে অনেকেই ঈমান আকিদা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তবে ইসলামে ধন-সম্পদ হওয়ার জন্য কিছু বিধি-বিধান রয়েছে। যা মেরে চলতে পারলে আপনার প্রচুর পরিমাণে সম্পদ হবে এবং আপনার কোন অভাব থাকবে না। প্রিয় পাঠক ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় এবং বিশেষ দোয়া ও আমল সম্পর্কে জানতে হলে আমার আর্টিকেলটি মিস করা যাবে না।

শেষ পর্যন্ত সাথে থাকতে হবে। আসলে একটি কল্যাণময় জীবন তারাই পায় যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা দান করে থাকেন। প্রিয় বন্ধুরা চলেন তাহলে জেনে নেই ইসলামে ধনী হওয়ার বিশেষ উপায়-দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

১.সূরা ইখলাস বা আন্তরিকতা

সাধারণত আমরা যারা মুসলমান তারা ইসলামের কিছু কিছু বেসিক ধারণা সবার রয়েছে। যে কোনো কাজে আমরা যদি সফলতা অর্জন করতে চাই বা ভালো কিছু করতে চাই তাহলে তার মন চাবিকাঠি হচ্ছে সূরা ইখলাস বা আন্তরিকতা।এই সূরার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। এ প্রসঙ্গে ওস্তাদ খুররাম মুরাদ বলেন,” উদ্দেশ্য কিংবা নিয়ত হল আমাদের আত্মার মত অথবা বীজের ভেতরে থাকা একটি জীবন্ত প্রাণ শক্তির মত।

বেশিরভাগ বীজ দেখতে মোটামুটি একই রকম হয়ে থাকলেও লাগানোর পর যখন গাছটি বেড়ে ওঠে তখন আসল পার্থক্য বোঝা যায়। তখন বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। ঠিক একইভাবে আমাদের নিয়ত যত বিশুদ্ধ হবে তেমনি আমাদের কাজের ফলাফল তত ভালো হবে।” এজন্য সব সময় আমাদের নিয়ত এমন হতে হবে যাতে আল্লাহ তা'আলা আমাদের স্মৃতিশক্তি ইসলামের কল্যাণের জন্য বাড়িয়ে দেই।

১.দুয়া এবং জিকির করা

আমরা সকলেই জানি আল্লাহ ছাড়া আমাদের কোন উপাস্য নেই। যে কোন কাজে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কখনোই আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারব না। এজন্য আমাদের সর্বদা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া এবং জিকির করা উচিত যাতে আল্লাহ তা'আলা আমাদের ধন সম্পদ এবং রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং আমরা কল্যাণময় জীবন অর্জন করতে পারি।

এছাড়াও জিকির এবং দোয়া বেশি বেশি আমল করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্মৃতিশক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। এজন্য সব সময় আমরা সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার এই ধরনের জিকির করতে থাকবো। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতগণকে সবসময় অভাবমুক্ত থাকতে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করার বিশেষ আবেদন জানিয়েছেন।

একটি হাদিসে এসেছে,' আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আজাবিল কাবরি লা ইলাহা ইল্লা আংতা।' এর অর্থ হচ্ছে হে আল্লাহু, আমি আপনার নিকট কুফরি এবং দরিদ্রতা হতে আশ্রয় চাচ্ছি। আমি কবরের আজাব থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি এবং আপনি খারাপ কোন ইলাহ নেই।

২.পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা

আজকাল স্মার্ট যুগে এসে প্রতিনিয়ত আমরা পাপ করে যাচ্ছি এবং সেটা যেন আমাদের কাছে খুবই সাধারণ একটি বিষয় হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত পাপ করে যাওয়ার আরো একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া।পাপের অন্ধকার কখনোই আমাদের স্মৃতিশক্তি এবং জ্ঞানের আলো এবং ধনসম্পদ বাড়াতে পারে না।

ইমাম আশ সাফি রাদিআল্লাহু তা'আলাআনহু বলেন,” আমি আমার ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম আমার শায়েখ এর কাছে, এবং তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপকর্ম থেকে বিরত থাকে এবং আল্লাহ তায়ালার দেওয়া জ্ঞান অর্জন করি।”অন্যদিকে আল খাতিব আল-জামি গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে যে,এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এবং ধনসম্পদ বাড়াতে পারে এমন কোন কিছু কি আছে?

এবং তিনি উত্তরে বলেন তুমি তোমার জীবনে করা সকল পাপকর্ম ছেড়ে দাও। সে থেকে আমরা বুঝতে পারি যে যখন মানুষ কোন পাপ করে তখন সে দুঃখের দিকে ধাবিত হয়। এজন্য আমাদের সবসময় ইসলামের জ্ঞান চর্চা করতে হবে তাহলে আমরা এর মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করতে পারব।

৩. বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা

এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানি যে ইস্তেগফার পাঠ করলে আমাদের অভাব মোচন হয়। আমাদের রিজিকে যেমন কোন অভাব আসে না ঠিক তেমনি সন্তান-সন্তুতির অভাব থাকে না। অভাবমুক্ত থাকতে পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করার কথা। বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করলে মহান আল্লাহতালা মানুষকে অসংখ্য রিজিক এবং নিয়ামত দান করবেন বলে জানিয়েছেন।

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,' আমি বলছি তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি ক্ষমাশীল এবং তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন।তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী নালা প্রবাহিত করবেন।' এজন্য বারবার আমাদের ' আস্তাগফিরুল্লাহ' পাঠ করা উচিত। এর অর্থ হচ্ছে আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

আবার আপনার এই দোয়া পড়তে হবে,' আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।' এর অর্থ হচ্ছে আমি আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার এই দিকে ফিরে আসছি।অন্নদিকে আরো একটি ইস্তেগফার আছে যেটা আপনি পাঠ করতে পারেন,' আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইউল কাইয়ুম আতুবু ইলাইহি।'

এর অর্থ হচ্ছে আমি ওই আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাই যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে ক্ষমা করার কোন মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব চিরস্থায়ী এবং তারই কাছে বারবার ফিরে আসি তওবা করে।

৪. যাকাত আদায় করা

জাকাত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলোর মধ্যে অন্যতম। আপনি যদি অভাবমুক্ত একটি সমাজ গঠন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক ভাবে যাকাত আদায় করতে হবে। কেননা অভাবমুক্ত সমাজ এবং পরিবার গঠনের উদ্দেশ্যে যথা সময়ে নিজের উদ্যোগ থেকে রাষ্ট্রীয় অথবা যাকাত ফান্ডে যাকাত জমা দিতে হবে। যাকাত কারা পাবে এটা সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে পবিত্র কুরআনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,' যাকাত হচ্ছে কেমন ফকির, মিসকিন জাকাত আদায়কারী ও যাদের ব্যক্তিত্ব আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক বা দাসী মুক্তির জন্য কিংবা ঋণগ্রস্তদের জন্য অথবা আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য নির্ধারিত। এটাই হচ্ছে আল্লাহর নির্ধারিত বিধান যা সব সময় প্রজ্ঞাময়।

মহান আল্লাহ তায়ালার বিধান বাস্তবায়ন করতে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যাকাত আদায়ের অস্বীকারকারীদের ব্যাপারে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এটা আমরা হয়তো অনেকেই জানি। আর সেই কারণে ইসলামী খেলাফতের সকল খলিফা দ্বিতীয় ওমর খ্যাত অর্জন ইবনে আব্দুল আজিজের সময় যাকাতের অর্থ গ্রহণ করার জন্য কোন ধরনের লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় না। প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো জেনে অবাক হবেন যে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখলে রিজিক বেড়ে যায়। হযরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন,' হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে ব্যক্তি পছন্দ করেন যে তার জীবিকা নির্বাহ হোক এবং তার মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক তবে সে যেন আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।

এবং সদাচরণ করে। এজন্যই আপনি যদি অনেক ধন সম্পদের মালিক হতে চান এবং অভাব থেকে দূরে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

৬. অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা

প্রাচুর্যতার আসলে নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই। যার যত বেশি আছে সে আরো যত বেশি চাই। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ধনের আধিক্য হলে ধনী হয় না, অন্তরের ধনী হচ্ছে প্রকৃত ধনী। আর সবসময় আল্লাহতালার শুকরিয়া আদায় করতে হবে।

আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা মুমিনের সফলতার একটি সোপান এটা আমরা সকলেই জানি। শুকরিয়া আদায়কারীদের ওপর নেয়ামত রাখা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,' যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো তাহলে আমি তোমাদের অবশ্যই নিয়ামত বাড়িয়ে দেব।' আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও তাহলে নিশ্চয় আমার রয়েছে কঠিন বড় আজাব। এজন্য আমাদের সব সময় অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করতে হবে।

৭. তাওয়াক্কুল করা কিংবা আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করা

শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করে ধনসম্পদ বৃদ্ধি করা যায়। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত,' রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, যদি তোমরা আল্লাহর উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারো তাহলে তোমাদের জীবিকা দেওয়া হবে কিভাবে পাখি রিজিকপ্রাপ্ত হয়।

পাখি সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় বের হয়ে যায় এবং পেট পূরণ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে। এজন্য সব সময় আমাদের আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা রাখতে হবে। বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করতে হবে এবং দান করতে হবে। আল্লাহতালা বলেন,' দানশীল পুরুষ এবং দানশীল নারী যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণদান করে তাদের দেওয়া হবে বহুগুণ বেশি এবং তাদের জন্য আছে মহাপুরুষ্কার।'

৮. তাওবা করা এবং আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা

তাওবা করার প্রকৃত অর্থ হচ্ছে সকল ধরনের পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা এবং পাপ বর্জন করা। নিজের ভুলের জন্য লজ্জিত হয়ে এবং ভবিষ্যতে সেটা আর না করার প্রতিজ্ঞা রেখে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চাওয়াটাই হচ্ছে তাওবা। হযরত হুদ রাযিআল্লাহু তা'আলা বর্ণিত,' হে আমার জাতি, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর অতপর তার দিকে যাও।

মহান আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর প্রচুর পরিমাণে দৃষ্টি দান করবেন এবং শক্তি বর্ধিত করে দিবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিওনা।বরং আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা করতে থাকো। অন্যদিকে আল্লাহতালার রাস্তায় ব্যয় করলে আল্লাহ তাআলার ধন সম্পদ বাড়িয়ে দেয়। এই মর্মে আল্লাহতালা বলেছেন,' আমার রব তার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং যাকে ইচ্ছা সীমিত পরিমানে দেন।

তোমরা যা ব্যয় করবে তিনি তার প্রতিদান দেবেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।' সুতরাং আল্লাহ তাআলার রাস্তায় ব্যয় করলে আল্লাহ আমাদের রিজিক এবং ধন সম্পদ বাড়িয়ে দিবেন।

৪০ দিনে ধনী হওয়ার আমল

প্রিয় পাঠক আপনি কি চল্লিশ দিনে ধনী হওয়ার আমল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন! আপনি কি ৪০ দিনে ধনী হওয়ার আমল সম্পর্কে গুগলে সার্চ করেছেন? আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ৪০ দিনে ধনী হওয়ার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য নিয়ে।৪০ দিনে ধনী হওয়ার বেশ কিছু আমল রয়েছে।

তবে আপনি যদি একজন মুমিন ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে হালাল পথে ইনকাম করতে হবে এবং ধনী হতে হবে। তবে আপনি যদি ইসলামিক উপায়ে ধনী হতে চান তাহলে বেশ কিছু নিয়ম এবং আমল রয়েছে। যদি নিয়মিত এই আমলগুলো করতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে আপনি অনেক ধান সম্পদের মালিক হতে পারবেন।

যদি নিয়মিত এই আমলগুলো করতে পারেন তাহলে আপনার ধন সম্পদ বেড়ে যাবে। আপনি এক নাগাতার ৪০ দিন পর্যন্ত এশার নামাজের পরে ওযু অবস্থায় থেকে কিবলামুখী হয়ে চোখ বন্ধ করে ৪০০ বার' আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম,বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি মিন জামিয়ি হুরমি ওয়া জুলমি এসরফি আলা নাফসি ওয়াআতুবু ইলাইহি।' এই দোয়াটি পাঠ করতে হবে।

রাতারাতি ধনী হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়

প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা রাতারাতি ধনী হওয়ার সবচেয়ে সহজ সম্পর্কে জানবো। আমরা সবাই চাই রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে। শুধুমাত্র ধনী হতে চাইলেই হয় না বরং রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলার উপর তাওয়াক্কুল করতে হবে এবং বেশি বেশি ইবাদত করতে হবে।

তবে আপনি যদি রাতারাতি ধনী হতে চান তাহলে আপনি ব্যবসা করতে পারেন। আপনি যদি হালাল উপায় ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার ব্যবসা করতে হবে।নিচে আমি আপনাদের জন্য কিছু ব্যবসা আইডিয়া দিচ্ছি যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজে ধনী হতে পারবেন।

অনলাইন বেকারি

আমরা জন্মদিন কিংবা অ্যানিভার্সারিতে অথবা বন্ধুর বার্থডেতে বিভিন্ন ধরনের কেক কিনে থাকি। এছাড়াও আজকাল যে কোন প্রোগ্রামে কেকের বেশ কদর রয়েছে। আপনি যদি বিভিন্ন রকম কেক বানাতে পছন্দ করেন তাহলে আপনার জন্য এই ব্যবসা করা খুবই সহজ। আজকাল কেক বানিয়ে সেটা ক্রেতাদের ঘরে পৌঁছে দেয় অনেকে।

আপনি যদি কেক বানাতে পছন্দ করেন কিংবা বিভিন্ন রেসিপি বানাতে ভালোবাসেন তাহলে আজ থেকে অনলাইন বেকারির দোকান দিয়ে দিন। সেখান থেকে আপনি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে এটি একটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রূপে দাঁড় করাতে পারবেন।

ফলের জুসের ব্যবসা

প্রচণ্ড গরমে যখন জনমানব অতিষ্ঠ হয়ে যায় তখন একটু ঠান্ডা পানি কিংবা ফলের জুস আমাদের স্বস্তি দিয়ে থাকে। আর আপনি যদি এই ধরনের কাজ করতে পছন্দ করেন তাহলে এখান থেকে আপনি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনার কাছে যদি 50000 টাকা থেকে থাকে এবং যদি এটা আপনি ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে 50000 টাকা থেকে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।বাজারের আশেপাশে বিভিন্ন অফিস কিংবা স্কুল কলেজের সামনে একটি জুসের দোকান দিয়ে দিন। সেখান থেকে আপনার প্রচুর পরিমাণে ব্যবসা শুরু হবে।

চায়ের দোকান কিংবা ফুডকার্ড

আপনার কাছে থাকায় সামান্য কিছু টাকা দিয়ে আপনি চায়ের দোকান নিতে পারেন। বাজারে সুন্দর একটি জায়গায় একটি চায়ের দোকান দিয়ে ফেলুন অথবা একটি স্টল বসানোর জায়গা কিনে ফেলুন।মোটামুটি দশ হাজার টাকার মধ্যে দোকানটি হয়ে যাবে। এরপর চায়ের দোকানটি ভালোভাবে সাজিয়ে ফেলুন। এভাবে দেখবেন আপনার মাঝে হাজার হাজার টাকা ইনকাম হচ্ছে।

এছাড়াও আপনি যদি বিভিন্ন ফাস্টফুড তৈরি করতে পারে তাহলে চায়ের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন ফাস্টফুড বিক্রি করবেন।এর মাধ্যমে আপনি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে।

জমিতে বিনিয়োগ করা

যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে নির্দিষ্ট মূলধন রাখতে হবে। কিন্তু সমস্ত ব্যবসায়ী ক্ষেত্রে আপনার সঠিক মূলধন বিনিয়োগের প্রয়োজন এবং এই ব্যবসাতেও আপনার প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হতে পারে। তবে অন্যান্য ব্যবসার মতো দুটি থাকলেও জমির ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসায়ী কোনরকম ঝুঁকি নেই বলতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই ব্যবসাটিকে ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসা বলা যেতে পারে।

কেননা আজকাল জমি কেনা বেচার ব্যবসাতে প্রতারিত সম্ভাবনা খুবই কম। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সঠিক মালিকের কাছে থেকে জমি কিনতে হবে। শুধুমাত্র তুমি কিনলেই হবেনা বরং এখানে জমির অবস্থান দেখে জমির দলিল সঠিক কিনা সেসব বিষয় মাথায় রেখে আপনাকে জমি কিনতে হবে। তারপর সেই জমি একটি নির্দিষ্ট বছরের জন্য হিসাব করে কাউকে বর্গা দিয়ে দিন।

সেখানে তিনি সেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফসল ফলাবেন এবং সে নির্দিষ্ট সময় বিক্রি করলে ভালো পরিমাণ আপনি লাভও পাবেন। জমি কেনার পর আপনাকে কোন টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না। এই ব্যবসা করার একটাই উদ্দেশ্য সেটা হচ্ছে জমির দাম বাড়া। কেন না জমি এখন সোনাই পরিণত হয়েছে এবং সোনার দাম যেমন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে ঠিক তেমনি জমির দাম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল জানুন

জুতার ব্যবসা করা

আজকাল মানুষ জামা কাপড়ের পাশাপাশি জুতা কেনার ক্ষেত্রেও অনেক বেশি সতর্ক থাকে। সবাই এখন নিজেদের পোশাকের সাথে মানানসই জুতা কিনতে পছন্দ করে। বাজার দেখলে বোঝা যায় বাজার থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার টু তা বিক্রি হচ্ছে। আপনার যদি জুতার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি জুতার মান বুঝে জুতার ব্যবসাটি করতে পারেন।

তবে আরেকটি বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে যুগের চাহিদা অনুযায়ী আপনার জুতার কালেকশন রাখতে হবে।আপনি অনলাইনে একটি জুতার দোকান করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায় অনলাইনে লোকেরা আপনার জুতা পছন্দ করবে এবং সেই জুতা সম্পর্কে ডিটেলস আপনি দিয়ে রাখবেন সেখান থেকে তারা অনুসন্ধান করতে পারবে।

এছাড়াও আপনি বাজারে একটি ছোট দোকান ঘর নিয়ে সেখানে জুতার ব্যবসা চালু করে দিতে পারেন। আপনি যদি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অফিসে থাকেন তাহলে সন্ধ্যার পর থেকে দোকানে বসতে পারবেন। দেখবেন গ্রাহকরা অবশ্যই আপনার কাছে আসবে। এছাড়া অনেক গ্রাহক আপনার অনলাইনে জুতার পেজ থেকে পছন্দ করে জুতা নিতে চাইবে।

এভাবে আপনি জুতার ব্যবসা করতে পারেন। বাজারে দোকান নিয়েও করতে পারেন আবার অনলাইনেও করতে পারেন। যদি আপনি বাজারে একটি জুতার দোকান দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার দোকান প্রচার-প্রচারণার জন্য কিছু ব্লগার এবং ইউটিউবারদের নিয়ে আসুন। এতে করে আপনার দোকানের ভিডিও তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হবে এবং এতে করে আপনার গ্রাহক বৃদ্ধি পাবে।

ড্রাই ফ্রুট এর ব্যবসা

আজকাল আমরা যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ঢুকি তখন ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন অবশ্যই সামনে আসে সেটা হচ্ছে হানি নাটের বিজ্ঞাপন। এই হানি নাট এবং এর সাথে কিছু বাদাম ও মধু সংমিশ্রণে আপনি একটি ড্রাই ফুডসের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই বাদামগুলো এবং শুকনো ফল গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন।

আর আজকাল মানুষজন অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে গেছে। যার কারণে এগুলো অনেকেই কিনে থাকে। মধু, কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, সাদা তিল, কিসমিস, খেজুর এবং মধু নিয়ে আপনি একটি ড্রাই ফ্রুটের দোকান করতে পারেন। এছাড়াও আরো অনেক উপাদান নিয়ে আপনি অনলাইনে বিভিন্নভাবে ব্যবসা করতে পারেন।

এটি বিক্রি করার জন্য আপনাকে বাইরে যেতে হবে না আপনি ঘরে বসেই একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে আপনার পণ্যের সুন্দর সুন্দর ছবির ভিডিও তৈরি করে বিক্রি করতে পারবেন। চাকরির পাশাপাশি আপনি এভাবে ঘরে বসে কিছু ব্যবসার শুরু করতে পারেন।

সিজনাল ব্যবসা

একজন লোক চাকরির পাশাপাশি কি ধরনের ব্যবসা করতে পারে এটা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে। একজন লোক চাকরির পাশাপাশি স্বল্প পুঁজিতে সিজনাল ব্যবসা করতে পারে। এটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। এই ব্যবসায়ী সব সময় কোন পণ্য রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না। যেমন ধরুন এখন আমের মৌসুম।

আপনি যে কোন এলাকার আম চাষিদের সাথে যোগাযোগ করে একটি চূড়ান্ত চুক্তি তৈরি করতে পারেন।সেখান থেকে কিনে এনে ঢাকার বা বিভিন্ন জেলার ফল বাজারে বিক্রি করলে আপনি ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন। আবার আপনি যদি মনে করেন আপনার এলাকার মৌসুমী পণ্য সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার এলাকার পণ্যগুলো পেতে তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।

এবং গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পাঠিয়ে আপনি অনেক ব্যবসা করতে পারবেন। মৌসুমী বিভিন্ন ফলের ব্যবসা করতে পারেন কিংবা রংপুর বা দিনাজপুরে প্রচুর শুকনা মরিচ উৎপন্ন হয় সেখান থেকে আপনি শুকনা মরিচের ব্যবসা করতে পারেন। এভাবে বিভিন্ন মৌসুমে ভোগ্য পণ্যের মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আয়ের মাধ্যম হিসেবে চলছে।

এভাবেই আপনি ব্যবসা করে হালালভাবে ইনকাম করতে পারবেন এবং ধনী হতে পারবেন। কিন্তু সর্বপ্রথম আপনাকে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে এবং বিশ্বাস রাখতে হবে। এই ব্যবসা গুলোর মাধ্যমে আপনি খুব কম সময়ে বা রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে পারবেন।

পাঠকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়-বিশেষ দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।

দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।আর এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url