কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয়

কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয় এসব নিয়ে আমাদের মনে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন রয়েছে। আমরা সকলেই জানি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া এবং আপনি যদি একজন মোটরসাইকেলের মালিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এটা করা বাধ্যতামূলক।
কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয়
মোটরসাইকেল লাইসেন্স ছাড়া আপনি বাংলাদেশের কোথাও যেতে পারবেন না মোটরসাইকেল নিয়ে। বর্তমান সরকার মোটরসাইকেল চালকদের রাস্তায় বাইক চালানোর সময় নিরাপদ জাগতে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেন তার মধ্যেই মোটরসাইকেল লাইসেন্স করা অন্যতম। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমার আর্টিকেলের বিষয় নির্ধারণ করেছি কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। জানতে হলে আমার আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।

কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয়

কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয় এসব নিয়ে আমরা গুগলে অনেকে সার্চ করে থাকি। বাংলাদেশে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করা যতটা সহজ মনে করা হয় ঠিক ততটা সহজ নয়। মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স প্রক্রিয়াগুলো আসলে একটু জটিল হয়ে থাকে।

কিন্তু আপনি যদি এই প্রক্রিয়া এবং নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সচেতন হতে না পারেন তাহলে আপনাকে বিভিন্ন ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। মোটরসাইকেল লাইসেন্স প্রক্রিয়া আসলে মোটরসাইকেলের প্রকারভেদ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার পদ্ধতি গাড়ি নিবন্ধনের মতোই হয়ে থাকে কিছুটা।

প্রথমত মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হলে আপনাকে আপনার নিজের মোটরসাইকেলটি স্থানীয় থানায় নিবন্ধন করতে হবে। ঢাকার মতো কিছু জেলা শহরগুলোতে থানা থেকে আপনাকে আপনার মোটরসাইকেল নিবন্ধনের অনুমতি দেওয়ার আগে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে বলা হবে।

কিন্তু যদি আপনার আশেপাশের কোন এলাকায় থানা না থাকে তাহলে আপনি জেলা প্রশাসনের অফিসে কিংবা অন্য কোন সরকারি অফিসে যেতে পারেন এবং সেখানে যানবাহনের নিবন্ধন নিয়ে কাজ করতে পারবেন। মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হলে প্রথমত মালিকের প্রথম ধাপ হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবকিছু বিআরটিএ অফিস প্রদত্ত আবেদন পত্র ফরম পূরণ করা।

এরপর আবেদন পত্রটি যখন বিআরটিএ অফিসের জমা দেওয়া হয়ে যাবে তখন কর্তৃপক্ষ সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করবে এবং সেগুলো বৈধ কিনা সেটা নিশ্চিত করবে। নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর তারা রেজিস্ট্রেশন ফ্রি চাইলে এবং একটি এসাইনমেন্ট পেপার আপনাকে দিবে। রেজিস্ট্রেশন ফ্রি প্রদানের পরে আপনাকে অবশ্যই বিআরটিএ অফিসে পরিদর্শনের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হবে।

মোটরসাইকেল পরিদর্শন শেষ করার পরে বিআরটিএ অফিসের তথ্য দেওয়া হয় এবং সরকারি পরিচালক নিবন্ধনের অনুমোদন দেন। এবং সাথে রেজিস্ট্রেশন নম্বর সহ একটি চিঠি ও পিকনিক সার্টিফিকেট এবং প্রিন্ট করার ট্যাক্স টোকেন মালিকের অন্যান্য নির্বাহীদের স্বাক্ষর সহ দেওয়া হয়।

 রেজিস্ট্রেশন এর তারিখ নিশ্চিত করার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট মালিক হওয়ার জন্য তাদের বায়োমেট্রিক বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ছবি অথবা ডিজিটাল কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বি আর টি এর প্রস্তাব অফিসে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক্স দেওয়ার জন্য এবং ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রস্তুত হওয়ার পরবর্তীতে মালিকের উভয় সময় এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত জানানো হবে।

মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার সুবিধা এবং অসুবিধা

মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই রয়েছে। মোটরসাইকেল লাইসেন্স মানে হচ্ছে সরকার অনুভূতির প্রতিশ্রম থেকে একটি সার্টিফিকেট পাওয়া যে এই মোটরসাইকেলের আসল মালিকানা আপনার এবং একই সাথে অফিসিয়াল ডকুমেন্টসের মোটরসাইকেলের সমস্ত তথ্য সেখানে লিপিবদ্ধ করা থাকবে।

মোটরসাইকেল লাইসেন্স পদ্ধতি অনুসরণ করার সময় আপনার কিছু বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু আপনি যদি আপনার মোটরসাইকেল লাইসেন্সনা করে থাকেন তার মানে এই যে আপনি সরকারকে যদিও ভ্যাট পরিশোধ করেন নি এবং অন্য কথায় লাইসেন্স খরচ আপনার হবে তবে এটি সরকারি খাতে যাবে।

তাই আপনার যদি মোটরসাইকেল লাইসেন্স করা না থাকে তবে আপনি যেকোনো সময় রাস্তাঘাটে মামলার মুখে পড়তে পারেন। তখন মামলায় নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা করা হবে আপনি এই জরিমানা দিতে যদি অক্ষম হন তাহলে আপনার গাড়ি নিয়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ আপনি যদি মোটরসাইকেল লাইসেন্স না করতে পারেন তাহলে আপনার গাড়িটি সম্পূর্ণ অবৈধ।

তাই মোটরসাইকেল লাইসেন্স করা একটি জরুরী। এবং একজন মোটরসাইকেল মালিকের মোটরসাইকেল লাইসেন্স করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে

মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদনের জন্য যে সকল কাগজপত্র লাগবে সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি। যারা প্রাথমিকভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদন করতে চাচ্ছেন তারা অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন যে তাদের কি কি প্রয়োজন ডকুমেন্ট লাগতে পারে।

তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমার আর্টিকেলের মধ্যে মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে জেনে নেই মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবেঃ
  • মালিক কিংবা ডিলার কর্তৃক যথাযথভাবে পূরণ ও স্বাক্ষর করা নির্ধারিত আবেদন পত্র লাগবে। এক্ষেত্রে বিআরটিএ ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে কিংবা বিআরটিএ অফিস থেকে আবেদন পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
  • বাইক মালিকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে।
  • বিল অব এন্ট্রি, ইনভয়েস ও এলসিএ কপি লাগবে।
  • সেল সার্টিফিকেট অথবা বিক্রয়ের বিভিন্ন তথ্য এবং বিক্রয় প্রমাণ লাগবে।
  • প্যাকিং লিস্ট, ডেলিভারি এবং গেট পাশের তথ্য লাগবে।
  • আয়কর প্রদানের প্রমাণ লাগবে।
  • বিদেশী নাগরিকের নামে যদি রেজিস্ট্রেশন কিংবা মালিকানা বদলি হয়ে বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য করা হয় তাহলে ভিসার মেয়াদের কপি লাগবে।
  • নির্ধারিত কাস্টম অফিস থেকে সত্যায়িত করা বডি ভ্যাট চালান ও ভ্যাট পরিশোধের চালান প্রযোজ্য।
  • বি আর টি এ কর্তৃক অনুমোদিত মোটরসাইকেলের বডি এবং সিট ব্যবস্থায় প্যাসিফিকেশন সমন্বিত ড্রয়িং প্রযোজ্য।
  • এরপর দরকার রেজিস্ট্রেশন ফ্রি জমা দেওয়ার রশিদ।
  • লাইসেন্সকৃত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা পাসপোর্ট অথবা ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি যে কোনটি সত্যায়িত ফটোকপি এবং মালিক কোন প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিষ্ঠানের আবেদন পত্র।
  • বি আর টি এ মোটরসাইকেল পরিদর্শকের দেওয়া বাইকটির পরিদর্শন আবেদন এবং ক্রয়ের সময় বিক্রেতার পক্ষ থেকে দেওয়া সকল প্রকার কাগজপত্র।
সকল কাগজপত্র দরকার আপনার মোটরসাইকেল লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে। তাহলে আর দেরি না করে আজই আপনার মোটরসাইকেলের লাইসেন্স সম্পন্ন করুন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার বিস্তারিত নিয়ম

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার বিস্তারিতের নিয়ম সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। কি কিভাবে পেশাদার এবং অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করা যায় এবং কত টাকা খরচ হয় এ সম্পর্কে হয়তোবা আমরা কিছুই জানি না। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে করার বিস্তারিত নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ

ধাপ ১

প্রথম আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বিআরটি এর নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলোর মধ্যে যেসব লাগবে সেগুলো হচ্ছেঃ
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি।
  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • নাগরিক সনদপত্র।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৪ কপি।
  • আসল ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড।
ব্যাংক ডিপোজিট দেওয়ার জন্য আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপিটি নিয়ে বিআরটি অফিসের নবায়ন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে সত্যায়িত করিয়ে নিতে হবে যা ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার সময় ব্যাংক ডিপোজিট ফ্রম এর সাথে জমা দিতে হবে। ব্যাংক ডিপোজিটর পরিমাণ সাধারণত ২৪২৭ টাকা হয়ে থাকে। এরপর এই টাকা জমা দেওয়ার পরে ব্যাংক রিসিপ্ট পেপার সংগ্রহ করে আপনার কাছে রেখে দিতে হবে।

ধাপ ২

ভালোভাবে আপনি ফর্মটি করবেন তারপর নির্ভুলভাবে পূরণ করার চেষ্টা করবেন। এখানে আপনাকে দুই ধরনের ফর্ম পূরণ করতে হবে। একটি হচ্ছে নবায়ন ফরম এবং মেডিকেল ফরম।

নবায়ন ফরম

নবায়ন ফরমের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্ত্রীর মোবাইল নাম্বার কিংবা স্বামীর মোবাইল নাম্বার ও নাম দিতে হবে। তবে আপনি যদি চান এই ফর্মটি আপনি অনলাইনে পূরণ করতে পারবেন।

মেডিকেল ফরম

মেডিকেল ফরমেট চেকআপ লিস্ট অনুযায়ী সকল বিষয় চেক করে ফরমটি একজন এমবিবিএস ডাক্তারের দ্বারা মেডিকেল টেস্ট করিয়ে সেটা সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে। এই ফর্মটি আপনি বি আর টি এর আশেপাশের যেকোনো ফটোকপির দোকানগুলোতেই সাধারণত পেয়ে যাবেন।

এই দুইটি ফরমে এক কপি করে ছবির সত্যায়িত করে নিয়ে লাগাতে হবে। এরপরে নবায়ন ফরম এবং মেডিকেল ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সহ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি এবং ব্যাংকের স্লিপ সাথে নাগরিক সনদপত্রের ফটোকপি,মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং আসল কপি সব কিছু একত্রে জমা করে দিতে হবে।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রেঃ

উপরের সকল ডকুমেন্টের সাথে প্রতিবেদন সত্যায়িত করতে হবে অবশ্যই। এক্ষেত্রে ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও এক কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ও পুনরায় ব্যবহারে পরীক্ষা আপনাকে দিতে হবে। আপনার যদি সমস্ত ডকুমেন্ট একদম ঠিকঠাক থাকে তাহলে সেদিনই অথবা পরের দিন আপনাকে একটি ডুবলিকেট ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে যা আপনি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে এসএমএস না আসা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন।

ধাপ ৩

বায়োমেট্রিক এসএমএস আসলে আপনাকে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া থাকবে। সেই তারিখ অনুযায়ী আপনাকে সেখানে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি দিয়ে আসতে হবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি দিয়ে আসার পর সেখান থেকে আপনি একটা কম্পিউটার কপি পাবেন।

ধাপ ৪

ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলার নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেল কম্পিউটার কপি নিয়ে যে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স আর স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এভাবে উপরের ধাপ গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি আপনার মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স খুব সহজেই নবায়ন করতে পারবেন এবং পুনরায় আপনার ইচ্ছা মতো মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন যেকোনো জায়গায়।

তালা ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে করণীয়

তালা ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে কি কি করতে হবে এ সম্পর্কে আমাদের এখনো অনেকেরই অজানা রয়েছে। দিন দিন মোটরসাইকেলের সংখ্যা যত বাড়ছে দেশে মোটরসাইকেল চুরি হওয়ায় ঝুকিও বেড়ে গেছে। আজকাল যে কোন জায়গা থেকে খুব সহজেই মোটরসাইকেল চুরি হয়ে যাচ্ছে। বাইকারদের উচিত তাদের নিজেদের মোটরসাইকেলের প্রতি আরো বেশি যত্নবান হওয়া।

আসলে বিশেষ কিছু সাবধানতার অভাবে মানুষজন বাইক চুরি ঠেকাতে পারছে না। তবে বিশেষ কিছু কৌশলে আমাদের এ বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। স্বাধীনতা আমাদের ট্রাফিক জ্যামের কারণে দিন দিন মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও বাইক চুরি হতে সাবধান থাকার ব্যাপারে এখনো অনেকে ঢেলেঢালা আচরণ করে থাকে।

আবার কারো একটু অসাবধানতার কারণে মূল্যবান বাইকটির চোখের আড়াল থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে খুব সহজে। বর্তমানে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে কিছু সিকিউরিটি সিস্টেম বাজারে এসেছে। আধুনিক এ সমস্ত লোক সিস্টেম এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা তুলনায় সবচেয়ে নিরাপত্তা দিবে। আপনার মোটরসাইকেলের সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে কিছু পদ্ধতি নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনাঃ

অথেনটিক ব্র্যান্ডের এক্সট্রা লক ব্যবহার করুন

সকল বাইকারদের উচিত তাদের নিজ নিজ মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের মজবুত তালা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভালো তারা ব্যবহার করা। তবে নিম্নমানের সস্তা তালা চাবি ব্যবহার করলে আপনি যে কোন সময় বিপদে পড়তে পারেন। কারণ নিম্নমানের তালাতে কোয়ালিটি কম হওয়ার কারণে খুব সহজে এটি ভেঙে ফেলা যায়।

মোটরসাইকেলের জন্য শুধুমাত্র একটি লক নয় বরং আপনি দুই থেকে তিনটি লক ব্যবহার করতে পারেন। যখন আপনি বেশি তালা ব্যবহার করবেন তখন অবশ্যই সবগুলো তালা ভাঙতে সময় লাগবে। এজন্য সব সময় আপনার মোটরসাইকেলের সাথে এক্সট্রা লক ব্যবহার করার অভ্যাস করুন। তবে এমন কিছু ক্ষতি করে তালা লাগাবেন যাতে করে চোরের কাছে আপনার লক ভাঙতে খুবই বেশি জটিল মনে হয়।

সে ক্ষেত্রে দামি মোটরসাইকেলের জন্য বেস্ট কোয়ালিটি দামি লক ব্যবহার করতে হবে। সে আপনার মোটরসাইকেলের সাথে অরজিনাল কোয়ালিটির মজবুত লোহার শিকল ব্যবহার করবেন। আপনি যখন মজবুতি লোহার শিকল ব্যবহার করবেন তখন সেটা চোরের জন্য কাটা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে যাবে।
কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয়

বাইক চুরি ঠেকাতে কিল সুইচ এর ব্যাবহার করুন

কিছু গোপন সুইচ ব্যবহার করে আপনার মোটরসাইকেল এর চুরি ঠেকাতে পারবে। মোটরসাইকেলের গোপন একটি সুইচ সেট করে নিবেন। এটি মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের সাথে লিংক দিয়ে গোপন জায়গায় বসাতে পারেন। কিল সুইচ দিলে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে এবং এটি আপনার মোটরসাইকেলের পুরি ঠেকাতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

এই সুইট আপনার মোটরসাইকেলে সেট করতে আপনার কাছাকাছি যে কোন মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর দোকানে নিয়ে যেতে পারে। এমনভাবে এই সুইট লাগাতে হবে যাতে চোরের নজরে সহজে না আসে। যথাযথ ছোট একটি সুইচ ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

জিপিএস ট্র্যাকার এবং সিকিউরিটি এলার্ম লক ব্যবহার করা

জিপিএস ট্র্যাকার এবং সিকিউরিটি এলার্ম লক ব্যবহার বাজারে খুবই প্রচলিত এখন। বাজার থেকে বেস্ট ব্র্যান্ডের বেস্ট ট্র্যাকার এবং এলার্ম লক এখন বেশি সাবস্ক্রাইমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। এটি যে কোন মোটরসাইকেলের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার জন্য এটি বেশ উপযোগী।

এলার্ম লক সিস্টেম যখন আপনার বাইকে থাকবে তখন আপনার জন্য এটি খুব সুবিধার হবে। এটি আপনাকে বাইক চুরি থাকাটাই সতর্ক করবে এবং সিকিউরিটি এলাং সর্বোচ্চ রেঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছায় এমন একটি বাইকের লাগাতে হবে। এছাড়াও জিপিএস ট্র্যাকার দিয়ে চুরি করা বাইক এর সন্ধান করতে পারবেন।

ডিজিটাল লক সিকিউরিটি ডিভাইস

সম্প্রীতি মোটরসাইকেল চুরি হওয়া থেকে আরও বেশি নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বাজারে এখন এসেছে ডিজিটাল লক সিকিউরিটি ডিভাইস। এই ডিভাইসটি আসলে কোনরকম চাবির সাহায্য ছাড়া শুধু কার্বন এডিশনের রিমোট দিয়ে বাইক চালানো যাবে। ডিভাইসে আধুনিক সিস্টেম যুক্ত করা রয়েছে যা ব্যবহার করে মোটরসাইকেলের লক দেওয়া যাবে।

চাবি দিয়ে লক করার ৩ সেকেন্ড পর আপনার মোটরসাইকেলটি অটোমেটিক ডিজিটাল লক সিকিউরিটি ডিভাইসের মাধ্যমে লক হয়ে যাবে। আবার রিমোট ব্যবহার করে অটোমেটিক লক খুলে যাবে। এই ডিভাইস এই ডিজিটাল প্রটেক্টেড এজন্য হ্যাক করা মোটেই সম্ভব নয়। এটি একটি সিকিউরিটি ডিভাইস হওয়ার কারণে চুরি ঠেকাতে বেশ কার্যকর।

এই সিস্টেমটি যদি আপনার মোটরসাইকেলে থাকে তাহলে ছিনতাইকারীর হাতে করলেও আপনার মোটরসাইকেলটি হারাবে না। যদি সন্দেহজনক কোন স্পর্শে আছে সাথে সাথে এলার্ম বেজে ভাইব্রেশন হবে এবং আপনাকে সতর্ক করে দিবে।

নিরাপদ জায়গায় গাড়ি পার্কিং করা

মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি পার্কিং করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাইরে কোথাও যখন আপনি মোটরসাইকেল পার্কিং করবেন তখন অবশ্যই এমন একটা জায়গা বেছে নিবেন যেখানে আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে।

এক্ষেত্রে যদি আপনার মোটরসাইকেল চুরি হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে চোরকে শনাক্ত করা যাবে এবং আপনি মোটরসাইকেলটি ফেরত পাবেন। বেশিরভাগ এটিএম বুথের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরার লাগানো থাকে। এজন্য এটিএম বুথের সামনে সিসিটিভির নিচে আপনার মোটরসাইকেলটি পার্ক করার চেষ্টা করবেন।

প্রয়োজনে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগান

আপনার বাসায় মোটরসাইকেল যেখানে পার্ক করা হয় যেখান থেকে যদি মোটরসাইকেল চুরি হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাবেন। বাসার পার্কিংয়ের সিসিটিভি ক্যামেরার লাগানোর একটি সুবিধা হচ্ছে আপনার মোটরসাইকেলের ওপর যখন-তখন আপনি নজর দিতে পারবেন।

মোটরসাইকেল চুরি হয়ে গেলে করণীয় কি

মোটরসাইকেল চুরি হয়ে গেলে করণীয় কি এটা নিয়ে সর্বপ্রথম আমাদের জানা উচিত। আপনার মোটরসাইকেল কোন দুর্ঘটনায় হারিয়ে যেতে পারে কিংবা চুরি অথবা ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। হারানো মোটরসাইকেল ফিরে অবশ্যই নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হবে সর্বপ্রথম।

তারপর মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ক্রয়ের রশিদ, লাইসেন্স নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর এবং মোটরসাইকেলের আরো যাবতীয় কাগজপত্র থানায় জমা দিতে হবে। থানার অফিসার আপনার অভিযোগ গ্রহণ করার পরে একটি গিরি নম্বর দিবে এবং মোটরসাইকেল উদ্ধারের কাজ শুরু করে দিবে। এছাড়াও মোটরসাইকেলে যদি জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো থাকে তাহলে আপনার মোটরসাইকেল খুঁজে পাওয়া আরও বেশি সহজ হয়ে যাবে।

FAQ:কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয় সে সম্পর্কে পাঠকের কিছু প্রশ্ন।

১.মোটরসাইকেল লাইসেন্স চেক করার নিয়ম কি?

মোটরসাইকেল লাইসেন্স চেক করার নিয়ম হচ্ছেঃ সর্বপ্রথম আপনাকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করতে হবে। বর্তমানে DL লিখে 26969 নম্বরে পাঠিয়ে দিলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের সকল তথ্য আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে।

২.মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে কি করব?

মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে তাদের প্রথম আপনাকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি অর্থাৎ জিডি করতে হবে। এরপর ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে গিয়ে ওই জিডির কপি এবং পুরনো ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি জমা দিতে হবে।

৩.ড্রাইভিং লাইসেন্স কত প্রকার হয়ে থাকে?

ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটা হচ্ছে পেশাদার এবং আরেকটি হচ্ছে অপেশাদার।অপেশাদার লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে কোন রকম প্রকারভেদ না থাকলেও পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে তিনটি ধরন রয়েছে। এগুলো সাধারণত যানবাহনের ওজনের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

৪.মোটরসাইকেল লাইসেন্স এর মেয়াদ কয় বছর?

মোটরসাইকেল লাইসেন্স এর মেয়াদ ১০ বছর।

৫.বাংলাদেশের মোটরসাইকেলের ভ্যাট কত শতাংশ?

বাংলাদেশের মোটরসাইকেলের ভ্যাট সব মিলিয়ে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ।

৬.লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে?

লাইসেন্স নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফ্রি আপনাকে জমা দিতে হবে অবশ্যই। ডাইনিং লাইসেন্স নবায়ন ফি ৪ হাজার ১৫২ টাকা। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ১৫ দিন পার হয়ে গেলে প্রতি বছর হিসেবে ৫১৮ টাকা জরিমানা আপনাকে দিতে হবে।

৭.ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কতদিন সময় লাগে?

ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সব কার্যক্রম শেষ করতে কমপক্ষে 15 দিন সময় লাগে। অর্থাৎ পনেরো দিনের মধ্যেই আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।

পাঠকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ ধরে আমরা জানলাম কিভাবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হয়-তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেল কিভাবে চুরি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।এছারাও আরও জানলাম তালা ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে করণীয় এবং মোটরসাইকেল লাইসেন্স আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

আশা করছি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করবেন।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।আজকে এই পর্যন্তই।দেখা হবে পরের কোন পোস্টে।আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।

আর এধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে এবং বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আর এতক্ষণ ধরে আমার আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url